Chatushkone, 2014
বোবা টানেল
১)
ফিরে গেছে কত, বোবা টানেলের গলা চিরে আলো
ইচ্ছেরা ছুটে চলে।
সারাটা দিন জুড়ে তুমি আনাগোনা করেছ সেই সুরে
তার রঙ লেগে আছে,
অবুঝের পেন্সিল।
ভালোবাসা বাকি আছে, তোমারও আমার কাছে
যা চেয়েছ দিতে আমি পারি না।
আমারও সময় ডালে ফুরিয়ে এসেছে পাতা
এত প্রেম কাছে এসে এলো না।
যদি কোনদিন তুমি, দু হাত দিয়ে ঝিনুক কোড়াও,
নেই আমি, সেই অল্প ভাঙ্গা গল্পগুলোয়,
কার সাথে আমি শব্দ ছুঁড়ে ফিরব বাড়ি,
মাঝরাতে আমি তোমার কথা বলব কাকে?
২)
হেঁটে গেছি আমি, আয়ুরেখা ধরে সাড়া দিতে এত
দেরী হয়ে গেল বলে।
জন্ম মৃত্যু ভেঙে, ভোরবেলা তুমি আলো হয়ে ফোটো
আমি জেগে আছি এসো,
প্রতি চুম্বনে স্থির।
কিভাবে নাগরদোলা, উলটে পালটে সবই,
আমাদের ছিঁড়ে খেলো জোনাকি।
আমারও সময় ডালে ফুরিয়ে এসেছে পাতা
এত প্রেম কাছে এসে এলো না।
যদি কোনদিন তুমি, দু হাত দিয়ে ঝিনুক কোড়াও,
নেই আমি, সেই অল্প ভাঙ্গা গল্পগুলোয়,
কার সাথে আমি শব্দ ছুঁড়ে ফিরব বাড়ি,
মাঝরাতে আমি তোমার কথা বলব কাকে?
সেটাই সত্যি
১)
এই বরফপাত, এই কঠিন রাত,
তোমার পুরনো অজুহাত,
এই আলো নীচে কাঁপতে থাকা
ছায়ার শিকড় ছিঁড়তে চাই।
এই উল্কাপাত, এই বিশ্রী রাত,
আচমকা এই গোপন আঁতাত,
সব ধ্বংস হওয়ার আগেই আমি
তোমার চোখে ভিজতে চাই।
আর কেউ তোমার ভাষাতে, সমুদ্রের ভালবাসাতে,
ফিরিয়ে নিয়ে গেল তোমায়, আহত ঝিনুক সৈকতে।
চিরাচরিত জীর্ণতায়, আমার প্রেমের তীক্ষ্ণতায়,
সব রেকর্ড করা থাকবে তোমার অন্তর্বর্তী শূন্যতায়।
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও, সেটাই সত্যি।
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও, সেটাই সত্যি।।
২)
ছন্দপতন ঘটতে থাকে, ভাঙতে গেলে ভুল করি
আমার বয়সের ওজন তোমার খবর রাখা জরুরি।
এই মৃত্যুমুখী শহর যেন, শূন্য মাপার কারখানা
গিলছে তোমায়, গিলছে আমায় অন্ধকারের আস্তানা।
আর এই কাফেতারিয়ায়, আবার যদি ফেরা যায়,
তোমার রুমাল মোছা ঠোঁটের এই নিয়ম মানার বাধ্যতায়।
তখন তোমার চিন্তাঘুম, মেনে নিতে পারলে না,
সব রেকর্ড করা থাকবে তোমার অন্তর্বর্তী শূন্যতায়।
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও, সেটাই সত্যি।
যদি এক মুহূর্তের জন্যেও আমায় চাও, সেটাই সত্যি।।
বসন্ত এসে গেছে (পুরুষ)
একরাশ বিপদের মাঝখানে শুয়ে আছি,
কানাঘুষো শোনা যায়, বসন্ত এসে গেছে।
বসন্ত এসে গেছে, কবিদের মৃতদেহ
চাপা পড়ে কাগজে, বসন্ত এসে গেছে।
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি,
আমলোকি বনে শোনো, বসন্ত এসে গেছে।
১)
দূর হোক বানানের অকারণ চিন্তা, হ্রস্বই, দীর্ঘই, হ্রস্বউ, দীর্ঘউ,
ফাঁকা হোক ফুটপাথ, হাঁটব আরামে
কোকিলের ডাকে গুটি ফেলব ক্যারামে
কেউ কানে কানে বলে গেল শোনা গেছে খবরে...বসন্ত এসে গেছে।
পূর্ণিমা রাতে ওই ছোটাছুটি করে কারা,
টুঁটি টিপে ধরে প্রেম, বসন্ত এসে গেছে।
রঙ লাগে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ডালপালা,
মুকুলের সন্ধানের বসন্ত এসে গেছে।
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি,
আমলোকি বনে শোনো, বসন্ত এসে গেছে।
২)
এই বসন্তে কয়েক বছর আগে,
তোমায় প্রথম দেখেছিলাম আমি,
হেঁটেছিলাম ভুট্টামাঠের পথে,
সেই বসন্ত এখন ভীষণ দামী,
আমার কাছে, তোমার কাছে, আমার কাছে... বসন্ত এসে গেছে।
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি,
আমলোকি বনে শোনো, বসন্ত এসে গেছে।
বসন্ত এসে গেছে (নারী)
বাতাসে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা,
কারা যে ডাকিল পিছে, বসন্ত এসে গেছে।
মধুর অমৃতবানী, বেলা গেল সহজেই
মরমে উঠিল বাজি, বসন্ত এসে গেছে।
থাক তব ভূবনের ধুলিমাখা চরণে
মাথানত করে রব, বসন্ত এসে গেছে।
১)
গগনের নবনীলে, মনের গোপনে বাজে ওই বাজে ওই বাজে ওই,
পলাশের নেশা মাখি চলেছি দুজনে,
বাসনার রঙ্গে মিশি শ্যামল-স্বপনে,
কুহু কুহু শোনা যায়, কোকিলের কুহুতান... বসন্ত এসে গেছে।
পূর্ণিমা রাতে ওই ছোটাছুটি করে কারা,
দখিনা পবনে দোলে, বসন্ত এসে গেছে।
কেমনে গাঁথিব মালা, কেমনে বাজিবে বেণু,
আবেগে কাঁপিছে আঁখি, বসন্ত এসে গেছে।
থাক তব ভূবনের ধুলিমাখা চরণে
মাথানত করে রব, বসন্ত এসে গেছে।
২)
এই বসন্তে অনেক জন্ম আগে,
তোমায় প্রথম দেখেছিলেম আমি,
হেঁটেছিলেম নিরুদ্দেশের পানে,
সেই বসন্ত এখন ভীষণ দামী,
আমার কাছে, তোমার কাছে, আমার কাছে... বসন্ত এসে গেছে।
থাক তব ভূবনের ধুলিমাখা চরণে
মাথানত করে রব, বসন্ত এসে গেছে।
মনে পড়ার গান
আমার চোখের নীচে কবেকার ক্লান্তি
তোমার ফুরিয়ে যাক জীবনের শান্তি,
সাবধান এটা মনে পড়ার গান,
সাবধান সব মনে পড়ার গান।
১)
তোমার প্রেমের শব্দমালা,
চাইছি বলে ভাংছি তালা,
তুমিও ভাঙছ মাঝে মাঝে,
আয়না দেখছ অন্য সাজে।
তোমার পদক্ষেপে নেশাতুর ছন্দ
শহরে ছড়িয়ে যাক রক্তের গন্ধ।
সাবধান এটা মনে পড়ার গান,
সাবধান সব মনে পড়ার গান।
২)
আগুন জ্বলছে পুড়ছে সব্বাই,
সাক্ষী আমরা রাখছি না তাই,
রাস্তাগুলো বিপদগামী,
তাও মরতে ভুলে যাচ্ছি আমি।
Nemesis নেমে আসে আমাদের মধ্যে,
মৃত্যুর ডানা মেলে শহরের পদ্যে।
সাবধান এটা মনে পড়ার গান,
সাবধান সব মনে পড়ার গান।